দুর্নীতি করে ফেলেফুঁপে উঠেছেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট এইচ এম আসাদুজ্জামান

আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রকল্পের এর এইচ এম আসাদুজ্জামান, টিম লিডার , স্কিল টিমের এর দুর্নীতির নানা তথ্য আমাদের কাছে এসেছে :

সাউথ সাউথ কোঅপারেশন, ফিউচার অফ স্কিলস এবং ফিউচার অফ ওয়ার্ক উদ্যোগগুলো দেখভাল করতেন তিনি। সাউথ সাউথ এর মাধ্যমে উনি সারা বিশ্বে অনুন্নত দেশগুলোতে নিজের উদ্যোগ গুলো প্রবর্তন করার চেষ্টা করেছেন এবং সরকারের খরচেই নিজের পছন্দের কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন । জর্দান ও সোমালিয়াতে এই কাজ তিনি করেছেন যার কোনোটাই আসলে তেমন ব্যবহৃত হয়নি বলে জানা যায় । এছাড়াও উনি নাইস বলে একটি প্লাটফর্ম পরিচালনা করতেন এবং চাকরি প্রার্থী ২০ লক্ষ মানুষের সিভি সহ একটি ম্যাচমেকিং প্লাটফর্ম বলে প্রচারণা করতেন। আদতে বিভিন্ন মেলা , অন্যান্য সরকারি ট্রেনিং প্রতিষ্ঠান সমূহের ট্রেনিং প্রাপ্তদের প্রোফাইল দিয়ে এই প্লাটফর্ম এর ডাটাবেজ সমৃদ্ধ করতেন। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান এর ব্যানারে , যেমন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি, পিপিডি ইত্যাদির সাথে যোগসাজশে উনি একের পর এক চাকুরী মেলা ও ওয়ার্কশপ আয়োজন করতেন।

ওয়ার্কশপের বিল ভাউচার বানিয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন । স্কিল টিমের লিডার হিসাবে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৩/৪ টি ওয়ার্কশপ আয়োজন করেছেন তিনি । প্রতিটাতে গড়ে ২.৫ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ টাকা সরকারি বাজেট নিতেন। বাজেটের খরচ বাবদ যেই টাকা নিতেন তার সামান্য কিছু খরচ দেখিয়ে বাকি টাকা ‘স্টাফ ফান্ডের নামে ক্যাশ সরিয়ে ফেলতেন। উনার টিমের দুইজন কর্মচারি এ কাজে উনাকে সরাসরি সহায়তা করতো। এছাড়াও এবিষয়ে ইউএনডিপি তে সরাসরি উনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। যার কপি আমাদের হাতে এসেছে । উনি এক ধাক্কায় ঢাকার আগারগাঁও তে এরকম ৪০টির বেশি টি ওয়ার্কশপ করেছেন । যার বিল ভাউচার বেশিরভাগই বানানো। এভাবে ২০১৯ থেকে ২০২৩ এ কোটি কোটি টাকা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং এটুআই এর অর্থে শুধুমাত্র ওয়ার্কশপে উনি খরচ করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে । যেকোনো ছুতোতে কক্সবাজার সহ ঢাকার বাইরে ওয়ার্কশপ আয়োজন করে সরকারি বেসরকারি কিছু কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তার করেন। এছাড়াও প্রায় ২০ এর অধিক বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতা স্মারক সাক্ষর করেন এবং এদের কাজকে নিজের প্লাটফর্মের কাজ বলে চালিয়ে দেন।

নারীদের প্রতি বিরূপ আচরণ এবং হয়রানি কর্মকান্ডে বেশকয়েকবার তার নামে অভিযোগ দাখিল হয়েছে। ইউএনডিপি তে বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান নারী সহকর্মী উনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন । ফর্মাল অভিযোগের কপিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। সেখানে হয়রানি , নারীদের অবমাননা , বিশেষ সুন্দরী অধস্তনদের সাথে সম্পর্ক সৃষ্টির চেষ্টা (না মানলে চাকুরী থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য চাপ প্রদান ) সহ সুনির্দিষ্ট ও বিশদ অভিযোগ দাখিল হয়। জাতিসংঘের স্বতন্ত্র তদন্ত দল তদন্ত শুরু করে এবং অভিযোগ কারীদের কাছ থেকে বয়ান নেয় বলে জানা যায় । আসাদ নিজের অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন এবং সরকারি কনসালটেন্ট হিসাবে আরো বেশি বেতনে সাথে সাথেই আবার এটুআই তে জয়েন করেন ।

অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং নিজের পেশাগত অক্ষমতা ঢাকার জন্য চালিয়ে গেছেন পেশাগত ক্ষেত্রে রাজনীতি। উনি উনার পুরো চাকুরী কালেই অযাচিত হস্তক্ষেপ করেছেন অন্যান্য প্রজেক্ট গুলোতে।

এইচ এম আসাদুজ্জামান চলমান তদন্ত প্রভাবিত করার জন্য ব্যক্তিগত ভাবে এটুআই এর প্রজেক্ট ডাইরেক্টর, তদন্ত কমিটির সদস্য সহ আইসিটি বিভাগের নানা কর্মকর্তার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করেন এবং বিভিন্ন গুজব কে সত্য তথ্য হিসাবে চালিয়ে দিয়ে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। উনি সম্প্রতি এটুআই তে নিজের বিভিন্ন পূর্ববর্তী অনুজ কলিগদের উনি আবার এটুআই তে ফেরত আসছেন এবং বর্তমান আইসিটি উপদেষ্টার সাথে উনার দেখা এবং কথা হয়েছে হিসাবে প্রচার করছেন ভীতি প্রদর্শনের জন্য। এছাড়াও বৈষম্য বিরোধী আইসিটি উদ্যোক্তা ফোরামের সমন্বয়কের দেশের বাড়ি উনার কাছাকাছি হওয়ায় উনি তাদের উপরেও প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা চালান বলে প্রচার রয়েছে ।

উনি আগারগাঁও তে নিজে চাকুরীরত অবস্থায় ফ্লাট কিনেছেন এবং অত্যন্ত বিলাসবহুল ভাবে ইন্টেরিয়র করেছেন। এছাড়াও ওয়ার্কশপের তছরূপকৃত টাকা দিয়ে উনি তালতলায় একটি নতুন নির্মীয়মান বাণিজ্যিক মার্কেটে বেনামে তিন তিনটি দোকান পজেশন কিনেছেন। এগুলোর কোনোকিছুই তাঁর আয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *