আপনার বয়স ৪০–এর ওপরে, ওজন বেশি, রক্তে কোলেস্টেরল বেশি, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপানের অভ্যাস কিংবা হৃদ্রোগের বংশগত ইতিহাস থাকলে জেনে রাখুন, আপনি হার্ট অ্যাটাকের উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই এখনই আপনার খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনুন, যা এ ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।
- অতিরিক্ত বা বাড়তি লবণ উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই পাতে লবণ রাখবেন না। অনেকে লবণ ভেজে বা টেলে খাওয়া ক্ষতিকর মনে করেন না। আসলে যেকোনো বাড়তি লবণই ক্ষতিকর।
- সম্পৃক্ত চর্বি ও ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবার, যেমন ফাস্টফুড, মাখন, ঘি দিয়ে তৈরি খাবার, বেকারির ও প্রক্রিয়াজাত খাবার হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
- সপ্তাহে কমপক্ষে দুবার উপকারী ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ সামুদ্রিক মাছ খান। এটি ধমনিতে প্লাক বা ব্লক সৃষ্টির প্রক্রিয়া মন্থর করে। টুনা, ইলিশ, রূপচাঁদায় এই ওমেগা থ্রি থাকে।
যে ৬টি লক্ষণ দেখলে হার্ট অ্যাটাকের ব্যাপারে সচেতন হবেন
- বিভিন্ন রকমের বাদাম যেমন কাঠবাদাম, আখরোট, চিনাবাদাম খাদ্যতালিকায় যোগ করুন। এগুলোতে প্ল্যান্ট স্টেরল, প্রচুর ফাইবার ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা হার্টের জন্য ভালো এবং এলডিএল ও ট্রাইগ্লসারাইড কমাতে সাহায্য করে।
- অনেকের ধারণা, হার্টের জন্য ডিম ক্ষতিকর। এটি ভুল ধারণা। ডিম একটি পুষ্টিকর খাবার। হার্টের সমস্যা থাকলেও সপ্তাহে দুই থেকে চার দিন কুসুমসহ ডিম খেতে পারবেন। বাকি দিনগুলোতে দৈনিক সাদা অংশ খেতে পারবেন। তেল বা মাখনে ডিম ভাজবেন না; বরং সেদ্ধ বা পানিপোচ খেতে চেষ্টা করুন। কুসুমেও কিছু উপকারী উপাদান আছে, যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো আর মস্তিষ্কের পুষ্টি জোগায়। এতে ভিটামিন এ, বি, ডি রয়েছে।
- হার্ট ভালো রাখতে আঁশ বা ফাইবার, খনিজ ও ভিটামিনযুক্ত শাকসবজি রোজ কয়েক রকম খেতে হবে। হলুদ, কমলা, লাল ও সবুজ রঙের সবজি মিশিয়ে খান। টমেটো, ব্রকলি, পালংশাক, মিষ্টি আলু হার্টের জন্য ভালো।
- যাঁদের হার্টের সমস্যা আছে, তাঁরা দুধ এড়িয়ে চলুন—এটাও ঠিক নয়। দুধ জ্বাল দিয়ে সর ফেলে খেতে পারেন। টক দইও খেতে পারেন। লো ফ্যাট দুধ বা টক দইয়ে যে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম থাকে, তা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
হৃদ্রোগ নিয়েও ভালো থাকা যায়?
- রেড মিট কম খেতে হবে, কিন্তু একেবারে বর্জনীয় নয়। ঝোল ও দৃশ্যমান চর্বি ছাড়া তিন থেকে চার টুকরা মাঝারি আকারের গরুর মাংস সপ্তাহে একবার বা দুই সপ্তাহে একবার খেতে পারবেন। রেড মিটে প্রচুর আয়রন, জিংক, ভিটামিন বি১২, থায়ামিন, রিবোফ্ল্যাবিন আছে। কম তেলে রান্না করতে হবে ও চর্বি ফেলে দিতে হবে।
- গোটা শস্য যেমন লাল চাল, লাল আটা, খোসাযুক্ত ওটস, ডাল, শিমজাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় রোজ রাখবেন। এগুলো ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। উল্টো সাদা চিনি, মিষ্টি বা ডেজার্ট, সাদা আটা, সাদা চাল এড়িয়ে চলুন।
- জেনিফার বিনতে হক পুষ্টিবিদ, গ্রিন লাইফ হাসপাতাল